রবার্ট ই হাওয়ার্ডের জন্ম আমেরিকার টেক্সাসে। প্রচুর ছোট গল্প লিখেছেন তিনি বিভিন্ন ম্যাগাজিনে। তবে তার মূল খ্যাতি কোনান দ্য সিমেরিয়ান চরিত্রের স্রষ্টা হিসেবে। সোর্ড অ্যান্ড সর্সারি নামক সাবজনরার জনক হিসেবে আখ্যা দেয়া হয় তাকে। ১৯৩৪ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন এই প্রতিভাবান লেখক।
বারান্দায় বসে ছিলাম। দাদু বেরিয়ে এল ঘর থেকে, প্রিয় গদি লাগানো চেয়ারটায় বসে প্রাচীন পাইপটায় তামাক ভরতে শুরু করল।
‘নাচের অনুষ্ঠানে যাসনি?’ জিজ্ঞেস করল সে।
‘ডক ব্লেইনের জন্য অপেক্ষা করছি,’ জবাব দিলাম। ‘গারফিল্ড বুড়োকে দেখতে যাব আমরা।’
কিছুক্ষণ চুপচাপ পাইপ টানল দাদু, তারপর আবার মুখ খুলল।
‘বুড়োর অবস্থা খুব একটা ভাল না, তাই না?’
‘ডক বলছে যে এবার আর বাঁচবে না।’
‘ওর দেখাশোনা করছে কে?’
‘জো ব্র্যাক্সটন। গারফিল্ড অবশ্য নিষেধ করছিল। কিন্তু কেউ একজনের থাকা দরকার তার পাশে।’
কয়েকবার পাইপে টান দিল দাদু। কিছুক্ষণ দূরের পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, ‘তুই নিশ্চয়ই ভাবিস যে জিম গারফিল্ড এই তল্লাটের সবচেয়ে বড় গুলবাজ, তাই না?’
‘গুল তো মারেই,’ স্বীকার করলাম আমি। ‘যে সব ঘটনার সাক্ষী হয়েছে বলে দাবী করে তার কিছু কিছু তো গারফিল্ডের জন্মেরও আগে হওয়া উচিত।’
‘১৮৭০ সালের দিকে টেক্সাসে এসেছিলাম আমি,’ হঠাৎ করে বলল দাদু। ‘এই লস্ট নব শহরকে একদম শুরু থেকে গড়ে উঠতে দেখেছি। কিচ্ছু ছিল না তখন এখানে। কিন্তু জিম গারফিল্ড বুড়ো ছিল, এখন যেখানে ওর বাড়ি ঠিক সেখানেই একটা লগ কেবিনে থাকত। তখন তাকে যেমন দেখেছিলাম, তার চাইতে এক বিন্দু বেশি বয়স্ক লাগে না এখন।’
‘এই কথা তো আগে বলোনি কখনও,’ অবাক হয়ে বললাম আমি।
‘বুড়ো মানুষের বকোয়াজ বলে উড়িয়ে দিতিস তাহলে,’ জবাব দিল দাদু। ‘এই অঞ্চলে জিম গারফিল্ডই প্রথম সাদা মানুষ হিসেবে বসতি গেড়েছিল। শেষ সাদা মানুষের বসতি তখন ছিল এখান থেকে পঞ্চাশ মাইল দূরে। কে জানে বুড়ো কিভাবে করেছিল কাজটা, কারণ এই অঞ্চল তখন কোমাঞ্চি ইন্ডিয়ানে গিজগিজ করত।
‘প্রথমবার যখন বুড়োকে দেখেছিলাম সে কথা মনে আছে আমার। এমনকি তখনও জিমকে সবাই “গারফিল্ড বুড়ো” বলেই ডাকত। তোকে যে গল্পগুলো শুনিয়েছে, সেই একই গল্প শুনিয়েছিল আমাকেও। তরুণ বয়সে নাকি স্যান জ্যাসিন্টোর যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, ইউয়েন ক্যামেরন আর জ্যাক হেইস-এর দলেও কাজ করেছে। তখন অবশ্য ওর কথা বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু এখন আর করি না।’
‘সে তো অনেক আগের কথা-’ প্রতিবাদ জানালাম আমি।
‘শেষবার এই অঞ্চলে ইন্ডিয়ান হামলা হয়েছিল ১৮৭৪ সালে,’ বলতে লাগল দাদু। ‘আমি ছিলাম সেখানে, জিম বুড়োও ছিল। বাফেলো রাইফেল দিয়ে সাতশ ইয়ার্ড দূর থেকে ইন্ডিয়ান নেতা ইয়েলো টেইলকে ঘোড়ার পিঠ থেকে ফেলে দিতে দেখেছিলাম ওকে।
‘কিন্তু তার আগে লোকাস্ট ক্রিকের একটা লড়াইয়ে গারফিল্ডের সাথে ছিলাম আমি। এক দল কোমাঞ্চির সামনে পড়ে গিয়েছিলাম আমরা। সূর্যাস্ত হবে হবে, এই সময় ঘটল ব্যাপারটা। সাতজনকে মারতে পেরেছিলাম, আর আমাদের তিনজন মারা পড়ল ওদের হাতে। সেই সাথে জিম গারফিল্ডও বর্শার আঘাত পেলো বুকে।
‘আঘাতটা খুব গুরুতর ছিল। এমন আঘাতের পর কেউ বাঁচে না। গাছের তলায় মরার মতো পড়ে ছিল ও। তখনই ঝোপের আড়াল থেকে এক বুড়ো ইন্ডিয়ান বেরিয়ে এল। বন্দুক তাক করলাম আমরা, কিন্তু ইশারায় শান্তির চিহ্ন দেখাল সে, স্প্যানিশে কথা বলল আমাদের সাথে। জানি না তখন আমাদের কেউ গুলি করেনি কেন। সবে মাত্র লড়াই শেষ হয়েছে, তখনও ভয় আর উত্তেজনায় কাঁপছি আমরা। কিন্তু বুড়োর মধ্যে কিছু একটা ছিল। আমাদের বলল, সে কোমাঞ্চি নয়, এবং গারফিল্ডের পুরনো বন্ধু। আমাদের অনুরোধ করল যেন গারফিল্ডকে একটা মেসকিট ঝোপের মধ্যে রেখে আসি তার সাথে। আর নিষেধ করল, পরে যেন কেউ ঝোপের দিকে না যায়। আমি এখনও জানি না লোকটা কি করেছিল। কিন্তু তার কথা শুনেছিলাম আমরা।
‘সেখানেই ক্যাম্প করলাম আমরা, কারণ ঘোড়াগুলো খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। সারা রাত পাহারা দিলাম পালা করে। তবে কোমাঞ্চিরা আর ফিরে এল না। জিম গারফিল্ডের দেহটা যেখানে রেখে এসেছিলাম সেখানে কি ঘটল আমরা কেউ জানি না। সেই অদ্ভুত ইন্ডিয়ানকে আর দেখতে পাইনি। তবে সারা রাত ধরে একটা অদ্ভুত গোঙানি শুনেছিলাম, যেটা কোনো মানুষের ছিল বলে মনে হয় না। আর মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ক্রমাগত ডাকছিল একটা প্যাঁচা।
‘ভোরবেলা মেসকিট ঝোপ থেকে বেরিয়ে এল জিম গারফিল্ড। ফ্যাকাসে চেহারা, টলছিল। কিন্তু জীবিত, এবং বুকের ক্ষতটা ইতোমধ্যেই শুকিয়ে আসতে শুরু করেছে। তারপর থেকে সেই অদ্ভুত ইন্ডিয়ান, ওই দিনের লড়াই বা তার বুকের ক্ষত সম্পর্কে একটা কথাও উচ্চারণ করেনি সে। আর একচুলও বাড়েনি তার বয়স; তখন যেমন ছিল এখনও দেখতে ঠিক তেমনই আছে – বছর পঞ্চাশেক বয়সের একজন মানুষ।’
চুপ করে বসে রইলাম আমি। দাদুও কিছু বলল না আর। সন্ধ্যার অন্ধকার চিরে একটা গাড়ির হেডলাইট দেখা গেল একটু পর, এগিয়ে আসছে এদিকে।
‘ডক ব্লেইন চলে এসেছে,’ বললাম আমি। ‘ফিরে এসে বলব তোমাকে গারফিল্ড কেমন আছে।’
লস্ট নব শহর থেকে গারফিল্ডের ফার্মের দূরত্ব তিন মাইলের মতো। যেতে যেতে আমাকে বুড়োর কথা খুলে বলল সে।
‘গিয়ে যদি দেখি বেঁচে আছে তাহলেই অবাক হবো। এই বয়সে ঘোড়া পোষ মানাতে যাওয়া ওর একেবারেই উচিত হয়নি,’ বলল ডক।
‘দেখে তো অত বেশি বয়স হয়েছে বলে মনে হয় না,’ মন্তব্য করলাম আমি।
‘পঞ্চাশে পড়তে যাচ্ছি আমি,’ বলল ডক। ‘সারা জীবন ধরে চিনি বুড়োকে। প্রথম যখন দেখি তখন তার বয়স কম করে হলেও পঞ্চাশ। লোকটার চেহারা দেখে বয়স আন্দাজ করার উপায় নেই।’
অতীতের একটা টুকরো হয়ে যেন দাঁড়িয়ে আছে গারফিল্ডের বাড়িটা। কাঠগুলো কখনও রঙের ছোঁয়া পায়নি। চারপাশের কাঠের বেড়া।
অগোছালো বিছানায় শুয়ে ছিল বুড়ো। ডক ব্লেইন যে লোকটাকে রেখেছে সে দক্ষ হাতেই সব কিছু সামলেছে। গারফিল্ডের দিকে তাকিয়ে আরও একবার লোকটার প্রাণশক্তির কথা ভেবে অবাক হলাম। কুঁজো হয়ে পড়েছে লোকটা, কিন্তু এখনও সবল। হাতে পায়ে পেশীর অস্তিত্ব বোঝা যায় ঠিকই। গলা আর মুখের চামড়া এখনও বেশ টানটান। চোখগুলোতে ব্যথার চিহ্ন, কিন্তু সেগুলোকে ছাপিয়ে যাচ্ছে দৃঢ় মানসিক শক্তির ছাপ।
‘প্রলাপ বকছিল,’ মৃদু গলায় বলল জো ব্র্যাক্সটন।
‘এই দেশে পা রাখা প্রথম সাদা মানুষ আমি,’ বিড়বিড় করে বলল জিম। ‘পাহাড়গুলো সুন্দর। বয়স হচ্ছে আমার। কোথাও থিতু হতে হবে। আজেবাজে লোকজন এসে ভরে যাওয়ার আগেই দখল করতে হবে জায়গাটা। ইউয়েন ক্যামেরনকে জায়গাটা দেখাতে পারলে ভাল হতো। মেক্সিকানদের গুলি খেয়ে মরল লোকটা। হারামজাদা মেক্সিকান!’
মাথা নাড়ল ডক ব্লেইন। ‘ভেতরে সব ভর্তা হয়ে গেছে। সকাল হবে না বোধহয়।’
হঠাৎ করে মাথা তুলল গারফিল্ড, তারপর পরিষ্কার চোখে চাইল আমাদের দিকে।
‘ভুল বললে, ডাক্তার,’ কাঁপা গলায় বলল সে। ‘বেঁচে যাব আমি। কয়েকটা ভাঙা হাড় আমার কিচ্ছু করতে পারবে না! হৃৎপিণ্ডটাই আসল। যতক্ষণ পর্যন্ত ওটা লাফাচ্ছে, মানুষ মরতে পারে না। আমার হৃৎপিণ্ড চলছে এখনও। শুনে দেখো!’
কোনোমতে হাত বাড়িয়ে ডক ব্লেইনের কবজি চেপে ধরল সে, তারপর হাতটা টেনে নিয়ে রাখল নিজের বুকের উপর। জ্বলজ্বলে চোখজোড়া তাকিয়ে রইল ডাক্তারের মুখের দিকে।
‘কি বুঝলে?’ প্রশ্ন করল গারফিল্ড। ‘গাড়ির ইঞ্জিনের চাইতেও শক্ত এটা!’
আমাকে কাছে যেতে ইশারা করল ব্লেইন। ‘এখানে হাত রাখো,’ বলে আমার হাতটা নিয়ে বুড়োর বুকের উপর রাখল সে। ‘হৃৎপিণ্ডটা আসলেও খুব শক্তিশালী।’
তেলের প্রদীপের নিষ্প্রভ আলোয় বুড়োর শীর্ণ বুকে একটা বিশাল, শুকনো ক্ষতচিহ্ন দেখতে পেলাম আমি – বর্শার আঘাতে যেমনটা হওয়া উচিত। সরাসরি তার উপর হাত নিয়ে যেতেই চমকে উঠলাম।
আমার হাতের নিচে স্পন্দিত হচ্ছে জিম গারফিল্ডের হৃৎপিণ্ড। কিন্তু এর আগে কখনও কারও হৃৎপিণ্ড এভাবে চলতে শুনিনি। মানুষের দেহের কোনো অঙ্গ নয়, আমার হাতের নিচে যেন লাফাচ্ছে কোনো ডায়নামো। বুড়োর বুক থেকে যেন অদম্য প্রাণশক্তির স্পন্দন বের হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। আমার হাত বেয়ে উঠে এসে বুকের মধ্যে ধাক্কা দিতে লাগল সেই স্পন্দন, মনে হলো আমার হৃৎপিণ্ডও যেন তাল মিলাতে চাইছে তার সাথে।
‘মরব না আমি,’ ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল বুড়ো। ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হৃৎপিণ্ড চলছে, ততক্ষণ আমার মরণ নেই। মাথার মধ্যে দিয়ে একটা বুলেট চলে গেলেই কেবল মরতে পারি। তখনও পুরোপুরি মরণ হবে না অবশ্য, কারণ বুকের মধ্যে থামবে না আমার হৃৎপিণ্ডটা। আমার বলছি, কিন্তু ওটা আসলে আমার নয়। ওটার মালিক লিপান ইন্ডিয়ানদের নেতা, গোস্ট ম্যান। কোমাঞ্চিরা তাড়িয়ে দেয়ার আগে এখানে থাকত লিপানরা। তাদের দেবতার হৃৎপিণ্ড ওটা।
‘ইউয়েন ক্যামেরনের দলে থাকার সময় গোস্ট ম্যানকে চিনতাম আমি। মেক্সিকানদের হাত থেকে একবার বাচিয়েছিলাম তাকে। আমাদের হাতে অদৃশ্য সুতো বেঁধে দিয়েছিল সে। যখন তাকে দরকার হয়েছিল আমার, তখন এসেছিল সে, আমাকে বাচিয়ে তুলেছিল।
‘মরে কাঠ হয়ে গিয়েছিলাম আমি। দুই টুকরো হয়ে গিয়েছিল আমার হৃৎপিণ্ডটা। সারা রাত ধরে জাদুর চর্চা করল গোস্ট ম্যান, প্রেতাত্মাদের দেশ থেকে ডেকে আনল আমার আত্মাকে। এখনও একটু একটু মনে আছে আমার। মনে হচ্ছিল ধূসর কুয়াশার মধ্যে দিয়ে ভেসে যাচ্ছি, আর সেই কুয়াশার মাঝ থেকে ভেসে আসছে মৃতদের আর্তনাদ, কান্না। কিন্তু গোস্ট ম্যান ফিরিয়ে আনল আমাকে।
আমার বুক থেকে টুকরো হয়ে যাওয়া হৃৎপিণ্ডটা বের করে আনল সে, আর দেবতার হৃৎপিণ্ড বসিয়ে দিল সেই জায়গায়। কিন্তু এর আসল মালিক সে। যখন আমার প্রয়োজন শেষ হয়ে যাবে, তখন এটা ফিরিয়ে নিতে আসবে গোস্ট ম্যান। অনেক বছর ধরে আমাকে বাচিয়ে রেখেছে, শক্তি দিয়েছে এই হৃৎপিণ্ড। বয়স আমাকে ছুঁতে পারেনি। সবাই আমাকে ধাপ্পাবাজ বলে, কিন্তু আমার কিছু যায় আসে না। আমি তো আসল সত্যিটা জানি!’
আড়ষ্ট আঙুলগুলো দিয়ে ডক ব্লেইনের কব্জি শক্ত করে চেপে ধরল সে। ঝোপের মতো ভ্রু’র নিচে একজোড়া প্রাচীণ, অথচ আশ্চর্য রকমের তারুণ্যে ভরা চোখ তীব্র দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইল আমাদের দিকে।
‘যদি কোনো কারণে কখনও আমি মারা যাই, তাহলে আমাকে কথা দাও তোমরা! কথা দাও যে বহু বছর আগে গোস্ট ম্যান আমাকে যে হৃৎপিণ্ড উপহার দিয়েছিল, সেটা বের করে আনবে আমার বুক চিরে। ওটার মালিক সে। যতক্ষণ এই হৃৎপিণ্ড আমার দেহে স্পন্দিত হতে থাকবে, মুক্তি পাবে না আমার আত্মা। পচে-গলে যাওয়া দেহে কখনও জীবিত বস্তু থাকতে পারে না! কথা দাও আমাকে!’
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, কথা দিচ্ছি,’ বুড়োকে শান্ত করার জন্যেই বলল ডক। আশ্বস্ত হলো গারফিল্ড, শিথিল হয়ে এল তার বজ্রমুষ্ঠি।
সে রাতে মরণ হলো না তার। পরের দিনও নয়, বা তার পরের দিনও নয়। পরের দিনটার কথা আমার মনে আছে, কারণ ওই দিনই জ্যাক কারবি’র সাথে ঝামেলা বেঁধেছিল আমার।
গুণ্ডা প্রকৃতির লোকজনকে মানুষ কেন যেন ঘাটাতে চায় না, তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেলেও না। আর কেউ যেহেতু জ্যাককে ঘাটাতে চায়নি, তাই তার ধারণা হয়েছে যে পুরো তল্লাট তার ভয়ে কাঁপে।
বাবার কাছ থেকে একটা ঘোড়া কিনেছিল জ্যাক। বাবা যখন সেটার টাকা আনতে গেল তখন সরাসরি বলে দিল, টাকা নাকি আমার কাছে আগেই দিয়ে দিয়েছে। কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারবিকে খুঁজতে বের হলাম আমি। এক শুড়িখানায় পাওয়া গেল তাকে, সে যে কত সাহসী তার বড়াই করছে সবার কাছে। বলছে, আমাকে পিটিয়ে শায়েস্তা করবে, বলতে বাধ্য করবে যে আমি নাকি তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের পকেটে ভরেছি। কথাটা শোনার পর মাথায় রক্ত চড়ে গেল। ছুরি বাগিয়ে তেড়ে গেলাম ওর দিকে, বেশ কয়েকটা পোচ মারলাম মুখে, গলায়, বুকে আর পেটে। সবাই মিলে আমাকে সরিয়ে না আনলে ওই দিনই ছিল কারবির জীবনের শেষ দিন।
(দ্বিতীয় খণ্ডে সমাপ্য)